পাহাড় ও নক্ষত্রপথ
পাহাড়-গড়ানো বিকালে ঝুলিয়ে কাঁধে ব্যাগ
শ্রমণের পথ ডিঙ্গানোর মত হেঁটে যাই কম্পহীন।
নিশ্চুপ স্থির এলানো ছড়ানো রয়েছে যা চারপাশে
নিষ্কণ্টক সবুজে আলোও যেন কেমন রাগিণী তুলেছে।
বরং হেঁটে যাওয়ার বিস্তারে ফেটে পড়েছে পাহাড়
কিছু নক্ষত্র কিছুটা রাত হলেই ফেটে পড়ে যেভাবে।
এমন হাঁটার দিনে, কার দাক্ষিণ্য পেতে লতারা
জড়িয়ে ধরে পা, প্রাণ-প্রাচুর্্যের ফোঁটা গিলে ঢকঢক!
পাঠ করি নক্ষত্র-পুরাণ, ঘাঁটি গেড়ে জুমঘরে
জোছনার চুইয়ে পড়া আলোর সাথে চুইয়ে পড়ে চুয়ানি।
যে কোন রাতেই মাতালের হাতে লিখিত হতে পারে
পরম পিতার গান—মা তোর শরীরখানি ভাগের ফল!
অস্ত্রভাষা
আমিও নন্দন ঘেঁটে প্রস্তুত, অস্ত্রভাষায় কথা বলি, এসো
বান্ধবী, স্নায়ুর সাগরে দীর্ঘকাল ঐতিহাসিক বাস্তব খুঁজেছি!
যত সহজে তোমাকে বোঝানো বা বলা যায়, তত সহজে কেন যে
লিখতে পারিনা, আহা চাঁদ, তোমাকে দেখার উদ্ভিন্ন ইচ্ছা মরেনা
এই সহজ প্রকৃতি, মানুষের রূঢ় বিস্তার, দিগন্তে লেখা দৃশ্য
কিছুই বিচ্যুত করতে পারেনা শব্দের শক্তি হয়ে ওঠা থেকে
ভাষা হয়ে যায় অস্ত্র, অস্র ঢুকে পড়ে মানুষের ত্রিসীমায়
এর পরিবর্তন/পরিবর্ধন যদি তোমার ভেতর লক্ষ্য করি
বান্ধবী কেন বলব না সহজ কথা, শুধু চুম্বন হতে পারে
নির্মোক আহবান!
মধুপুর
কোন এক মধুপুর যাওয়ার সময় আমারে তুমি সঙ্গে নিও
প্রস্তুতির থাকবে না বাকি, যা যা লাগবে সঙ্গেই নিয়ে নেব
পবিত্র জঙ্গল এক মধুপুর, ওখানে যেতে পারলে সবিশেষ
জানতে চাইব—মানুষ কিভাবে জড়ো হলো, কেননা নিজের
থেকেও ইংগিতময় কিছুর মুখোমুখি মানুষ হতেই পারেনা!
এক শুকনো পদ্য-লেখা-ভোরে আমরা হয়ত-বা পৌঁছে যাব
সারারাত বাসজার্নি শেষে, লালমোরগের মত চোখ নিয়ে।
অজস্র মধুর খোঁজ মিলে সেইখানে, ইতিউতি দেখে নিয়ে
মেপে নেব সেই বাস্তবতা—আশলেই মানুষ বিপন্ন একা—
ইতি, ফ্রিদা
মাইয়াটা রোদে ডুবে মারা যায়
আমার খুব দুঃখ লাগল শুনে
দূর সমুদ্রে রাত যখন ছড়িয়ে পড়েছে
বাদাম খোসায় ভেসে সে খবর আসে কানে
ফ্রিদা আহা ফ্রিদা, আত্মার যমজ
মাইয়াটা সুতা ধরে ঝুলে যায়
চিড় ধরেছে মনের ভেতর জখম
আগুন সকালে দরজার ওপারে ঝোলানো
বিষ্ময় হা-মুখে মাছি ঢুকে যায়
ইতি আহা ইতি, আদিগন্ত গাঢ়
বাসার ভেতর
বাসার ভেতর থেকে দেখি
ভাড়া করা জীবনের দিনগুলি
রাতগুলির বেশিরভাগ
বিশ্রাম আর স্বপ্নের।
আলোছায়াভরা ছুটির সময়গুলো
ভাড়া করা জীবনেরই বর্ধিতাংশ
যদিও তার জন্য সর্বাঙ্গীন
প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখি।
যেন আয়ু কেটে যাচ্ছে ধার-ব্লেডে
যেন আয়ু উড়ে যাচ্ছে পাখি-ঠোঁটে
২.
নিজের কেন্দ্র বলতে বুঝি
একটাই—বাসার ভেতর অংশ,
সম্পূর্ণ শরীর ধরে রাখে।
আত্মার অবিকল কোন মিটার
যদিও চালু নেই, তবু
বাসাই রাখে আলোঅন্ধকারের
স্বরগ্রাম, বেতনভূক প্রহরী।
আমার পরিচ্ছন্ন হৃদয়
অনুভব করে—পয়দা হবার পর
খন্ডকালীন এই শরীর,
তা ভাড়ার হোক বা নিজের
No comments:
Post a Comment