প্রকল্পের
স্বার্থে
দশ
লক্ষ গাছের নিঃশব্দ মৃত্যু পেরিয়ে
এসেছি
এই লোকালয়ে
পরিদর্শক
অথবা দালাল
তোমার
বুকের ঘাম শুষে নেয় দক্ষিনের হাওয়া
চাষ
আবাদ বৃথা স্বপ্নের
উৎপাদিত
ফসলের দামে মড়ক লেগেছে
উঠোনের
পেয়ারা গাছ স্মৃতিকান্নার মায়া জল
একদিন
আলোর রোশনাই মুছে দেবে সব অপঘাত
একনিষ্ঠ
কর্মীর নিরুপায় চাপা সন্ত্রাস
এ
ব্যাপারে আমার যাবতীয় কবিতা আশ্চর্য নীরব
আত্মরতিপ্রিয়
গায়ক সহজ নয়
গান তবু ব্যর্থ এক অভ্যাসবশত
দূর থেকে দেখি সুর নেমে আসেনি জীবনে
শব্দ দিয়ে ছুঁয়ে আছি অর্থের বিনিদ্র কেকা
মুগ্ধতার আজীবন অভিশাপে ছুটে গেছি আমি
অসময়ে গেয়ে ওঠো গান-- দরজায় করাঘাত শুধু
শুদ্ধতার ছলনায় সে তবু দূরে সরে গেছে
গায়ক সহজ নয়
মনে মনে গান তার একার প্রসাদ
পদাবলী
শান্ত ভালোবাসার বাড়ি -- আজ তার পর্যটন নেই
উপেক্ষা রহস্যের মুগ্ধ আয়োজন
তুমি এলে উপহার হাতে বয়স পেরিয়ে গেছে অসময়
ঘুমন্ত চোখে আমি শুভেচ্ছা জানাই
আমিহীন এই ঘরে অব্যবহৃত কিছু স্মৃতির পোশাক
স্বীকৃতি নেই -- তোমার ঠোঁটের অপর্যাপ্ত মেঘে
আমাকে ছাড়িয়ে যায় দুপুরের অবসন্ন আমি
পুকুরের জলে লেগে আছে এঁটো বাসনের ছায়া
দুজনেই অপ্রস্তুত এমন গোধূলি
মিথ
বিবিধ তৈজসপত্রে গিন্নিমা বুঝে নেন সংসারের ভার
লোভনীয় ভাগ একদিন বুঝে নেবে
অলস বিড়াল
আপাতত কুকুরের সন্দেহ বসেছে সান্ধ্য পাহারায়
বংশানুক্রমিক রোগে ধায় অন্ধ স্থবিরের করি ও বরগা
তক্ষশীলা পুথিপাঠ জেগে ওঠে ঘুমের আড়ালে
প্রপিতামহের ঘড়ি কী ভীষণ যৌনকাতর
ঈর্ষণীয় ছায়ায় রাজহাঁসের ভাঙাচোরা শুন্য বিভঙ্গ
এই বাড়ি যাওয়ার শর্টকাট জানে সব রিক্সাওয়ালা
আর এক উদাসীন
একা ঘোরে বনময় , ছায়াময় , বংশানুক্রমিক
সেকথা বলতে বলতেই আপনার সামনে সে পাগল হয়ে যাবে
উচ্ছেদ
এই বাড়িটিকে ধরে রাখি নগ্নতার
পাখির বাসাসমেত ভয়ের আবহ দিনরাত
জ্যামিতিক বেদনার দুইপাশে কলঘরে পুরুষ দখল
অশান্ত হাওয়ায় তুমি নিয়ে এলে তুচ্ছ সংবাদ
উচ্ছেদের ভীরু এক রাজনৈতিক গল্প
টবের ফুল কেঁপে উঠল ।এর বেশি কী হতে পারে
গিন্নিমার শাঁখা এঁটো বাসন ছড়িয়ে বসেছে এতদিন
গোপন জলে সাঁতরে বেড়ায় তার একান্নবর্তী হেঁশেল
এই শুধুমাত্র -- পুনর্বাসন -- পুনশ্চ প্রেক্ষিতে
বাড়ি নয় অশ্বত্থের শিকড় আমি ভাবি তোমার প্রতিভা
নেপথ্যজীবন
সকল শীতের মুখ ম্লান
দুর্নিবার হিম পরাজয়
কবিতার এই ভাসানে তোমার ঠোঁট কেঁপে ওঠে
অদৃশ্য না-য়ের বাতাস
বাতিল যৌনতার বিবর্ণ একফালি ছাদ
তুমি চলে গেলে পড়ে থাকবে অবসন্ন ঘুমের শরীর
তুমি চলে গেলে-- অথবা শরীর -- ঘুম ঘুম এই অবসাদ
ভাষা বিচ্ছেদের দিনে একটি কবিতা বসে আছে
একফালি ছাদের রোদ্দুরে
প্ররোচক হাওয়ায় দুলে ওঠে ঋতুমতী শাড়ি
অন্ধপথ কোথায় চলেছে -- কোথায় চলেছে ঘরবাড়ি
রূপান্তর
ঘুমের ভিতর জেগে উঠেছে একটি আদিম গাছ
ডালপালা সমেত
তার শিকড়ের নীচে অলৌকিক শহর
রাস্তার মাঝখানে বসে সাপলুডো খেলছে
কয়েকটি নারী আর এক উদাসীন বাঘ
দৃশ্য জটিল -- পরমার্থের দিকে ঝুলে ব্যর্থ সংকেতের নীড়
বিষণ্ণ মাছওলা এবং মরা ইলিশের রক্তের বিস্ময়
সন্ধিপত্র ধূসর
নোনা বাতাসের দাবি-- অসহায় পুরুষের নিঃসঙ্গ দুপুর
নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে বসেছে শান্ত বাজার
ঘুমের দুপাশে এক যাদুকর
ক্রেতা ও বিক্রেতা সেজে ফেরি করে শস্যের আলেয়া
অবসন্ন গোধূলির আলোয় রঙিন শৈশবের বিবাহবাসর
ঘুম নেই তোমার অবৈধ প্রশ্রয়
প্রান্তিক যৌনতাকে মিথ্যে করে দেয় রূপান্তরিত এই দেশে
ওগো ঘুম , ওগো জেগে থাকা স্মৃতিবিনাশক
সম্মাননা
ভাবি এই পুরস্কার কাকে দিয়ে যাবো
অবচেতনের হে অবৈধ সন্তান
চায়ের দোকানের ক্রেতা ও বিক্রেতা
ফুটপাতের উদাসীন দেবতা
কে আমার আখ্যানে এসে চরিত্রের প্রস্তুতি লিখে রাখে
একটি নির্জন পথে মনোরোগে ছিন্নভিন্ন একার আকাশ
একটি গন্তব্য নানা পথে খোঁজে সম্ভাবনা
একটি পুরস্কার বলে দেয় ভীড় থেকে উঠে এসো আর
ভুল পাঠকের জনাদেশ জন্ম নেয় জন্ম জন্মান্তরে
ফেরা হয়নি আর দেখা হয়নি কখনো সূর্যাস্ত টিলার উপরে
সুদূরপ্রসারী ভোরে পুরোনো লেখার ব্যথা টের পাই
এই পুরস্কার তার জারজ বেদনার উদভ্রান্ত পাঠপ্রতিক্রিয়া
সম্পর্ক
একটি যুক্তিহীন পুরুষ ঘর ছেড়ে যাচ্ছে
এই দৃশ্যে ভেঙে পড়ে সমস্ত প্রতিরোধ
খড়ের কাঠামো জানে প্রত্যাখ্যান সহজ হবে না
শুধু ধুলোবালি এঁকে নিস্পৃহ কোদাল
আরাধ্যের খুব কাছে
উঁকি মেরে দেখে নেয় কতদূর অবিশ্বাস্য মোমবাতি জ্বলে
নম্র শীতে এ ওর কাঁথায় গুটিয়ে রেখেছে ঘুমন্ত জীবন
মধ্যাহ্নে মনে হয় অপরাধ
নির্জন রাতের ঘন শ্বাসে আর একবার শান্ত খাঁচার ভিতর
শুরু হয় সাপলুডো খেলা
তবু জেগে থাকো -- এই জেগে থাকা সহজ হবে না
স্বভাব দোষে পঙ্কজ দা ভালো লেখে। ভালো কিছু কবিতা পড়লাম । ভালো থেকো দাদা। আরো লেখো। অপেক্ষা রইল তোমার আগামী বইয়ের ।
ReplyDeleteধন্যবাদ ভাই ।আমার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল ।
ReplyDelete